ছেলে-মেয়ে 'যৌন আকর্ষণমুক্ত বন্ধুত্ব' (Platonic Friendship) কি সম্ভব?
রাহাত ভাই: মেয়েদের নর্মাল ভয়েজ শুনলেও ছেলেদের কানে গানের মত লাগে।
আমি: আসলেই। একটা লিস্টে কয়েকটা ছেলের নাম লেখার পরে একটা মেয়ের নাম আসলেও ছেলেদের একটা ডিফরেন্ট ফিলিংস হয়। আলি রাদ্বিআল্লাহু আনহু এজন্যই বলসেন, "মেয়েরা যদি জানতো ছেলেরা মেয়েদের ব্যাপারে কী ভাবে তাহলে তারা লোহার খাঁচায় নিজেদেরকে আটকে রাখতো।"
রাহাত ভাই: হ্যাঁ ভাই, আমারও এমন মনে হয়। আমি মেয়ে হলে এভাবেই থাকতাম মনে হয়। কারণ ছেলেদের যে অবস্থা দেখি...
আমি: মেয়েদের পর্দার বিধান যে কতটা রিয়েলিস্টিক এটা ছেলে মাত্রই বোঝে। ইসলামও এক্সেপশনালি রিয়েলিস্টিক।
স্টিভ হার্ভি একবার বলেছিলেন উনার কোনো মেয়ে ফ্রেন্ড নেই। উপস্থাপক জানতে চান, কেন নেই। স্টিভ হার্ভির জবাবটা মোটামুটি এমন ছিলো, কোনো ছেলে যখন কোনো মেয়েকে বলে তারা শুধু ফ্রেন্ড- এটা ডাহা মিথ্যা কথা। সেই ছেলে 'ফ্রেন্ড' নাম দিয়েছে ক্লোজ হওয়ার জন্য। মেয়ে যদি ফ্রেন্ড বানিয়েও ছেলেকে কাছে রাখে, সে ছেলে কাছে থাকতে পারলেই খুশী। কখনো যদি দরজায় সে একটুও ফাঁকা পায়, আপনার ফিলিংসে কোনো সুক্ষ্ম ফাঁকাও সে দেখে, সে সেটা দিয়েই ঢুকে যাবে। ৯৯.৯% ছেলেই এভাবেই ভাবে। মেয়েরা এটা মানতে পারে না। ছেলেরা শুধু 'ফ্রেন্ড' এজন্যই কারণ এরা এখন অন্য কিছু হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। আপনি আপনার কোনো ছেলে ফ্রেন্ডকে জিজ্ঞেস করুন, সে আপনাকে ডেইট করবে কিনা। যা উত্তর পাবেন তাতে অবাক হয়ে যাবেন।
আপনি সুন্দর, এট্রাক্টিভ দেখেই সে আপনার বন্ধু। অনুভূতিটা একই থাকে। আমরা শুধু 'ভাই', 'বন্ধু', 'বয়ফ্রেন্ড', 'বেস্টফ্রেন্ড' নাম দিই। রিসার্চের পর রিসার্চে এসেছে, ছেলেরা কীভাবে মেয়েদের হাসি দেখেই পটানোর পসিবলিটি বুঝে যায়, মেয়ের হাসির শব্দ, স্পর্শ, ন্যাকামিই তার চাওয়া। সে আপনার সাথে যেভাবে কথা বলে, যেভাবে অনুভূতি জানায়, যেভাবে কমপ্যাশন জানায়, যেভাবে নিজের সম্পর্কে আপনাকে বলে সেভাবে সে তার কোনো ছেলে ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলে না। কোনোভাবেই না। মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। সব ছেলে তাদের মেয়ে 'ফ্রেন্ড' বা 'বোন'কে ইম্প্রেস করতে চায়। উইদাউট এনি ডাউট।
ওয়েস্টে একসময় ছেলে-মেয়েরা এ পর্যায়ে ছিলো। কিন্তু ঠিকই তারা বুঝে গিয়েছে, ছেলে-মেয়ে কোনোভাবেই তাদের সম্পর্ককে স্বাভাবিক যৌন আকর্ষণের বাইরে রাখতে পারবে না। তাই তারা জড়িয়ে পরেছে হুকিং আপ (অজানা যে কারো সাথে শুধু আনন্দের জন্য যৌন সঙ্গম), ক্যাজুয়েল সেক্স (পরিচিত, স্বল্প পরিচিত যেকারো সাথে কোনো প্রকার রোমান্টিক সম্পর্ক ছাড়াই সঙ্গম) ও ফ্রেন্ড উইথ বেনেফিট (একই সাথে ফ্রেন্ড ও সেক্স পার্টনার) কালচারে। আজ আপনি অন্য ছেলেকে 'ফ্রেন্ড' বানাচ্ছেন, কাল আপনার মেয়ে ক্যাজুয়েল সেক্স করবে। এটাই হবে। এভাবেই হয়েছে বিশ্বজুড়ে।
আল্লাহ খেল-তামাশার জন্য কোনো বিধান দেন নি। প্রত্যেকটি বিধানের পেছনে আছে খুব ইন ডেপথ রিজনিং৷ পরিবার, বাবা-মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্ক, সমাজের গঠন ধরে রাখতে হলে ইসলাম যে জেন্ডার রোল দিয়েছে, পর্দার যে বিধান দিয়েছে তা মানতেই হবে। ইতিমধ্যেই চরিত্র হয়ে পড়েছে খুবই দূর্বল একটি কনসেপ্ট। ভার্জিনিটি নষ্ট হওয়ার চেয়ে মোবাইল নষ্ট হওয়া বেশি কষ্টের এ জেনারেশনের কাছে। কমোডে থাকছে মানবশিশু, ডিভোর্স ও পরকিয়ার মহামারি, ভেঙে পড়ছে সমাজ। কোনো উপায় নেই ইসলামে ফেরা ছাড়া। কোনোভাবেই নেই। কীভাবে থাকবে? নিজের হাতে বানানো সৃষ্টি সম্পর্কে স্রষ্টা বাদে কে বেশি জানে? কোনো বিধান, কোনো আইনের কোনো অস্তিত্ব নেই, কোনো মর্যাদা নেই, কোনো মূল্য নেই আল্লাহর আইন বাদে। তা যত বড় ভার্সিটি, স্কলার বা জার্নাল থেকেই আসুক।