বই পড়ার বিকল্প কী?
আজকাল দেখবেন মানুষ অনেক জানে। সে ইরানের যুদ্ধাস্ত্র সম্পর্কে জানে, মিডিয়ার প্রোপাগান্ডা সম্পর্কে জানে, ইসরায়েলের রেড হাইফার, উত্তর কোরিয়ার জুলুম, হাসিনার আমলের দূর্নীতি, র এর কাজ- অনেক কিছুই সে জানে। একদম চায়ের দোকান থেকে নিয়ে ফাইভ স্টার রেস্টুরেন্ট- সবখানেই আপনি এমন অনেক কিছু জানা মানুষ দেখবেন।
মানুষ এতো বেশি জানার কারণ কী? কারণ ইউটিউব, ফেসবুক। ইউটিউব-ফেসবুক থেকে মানুষ অনেক ভিডিও দেখে, পোস্ট দেখে, ছোট ছোট ফটোকার্ড দেখে। সেটা থেকে সে নির্দিষ্ট টপিক সম্পর্কে ধারণা পায়। এগুলো নিয়েই সে মানুষের মধ্যে কথাবার্তা বলে।
তাহলে কি বই পড়ার গুরুত্ব কমে গেছে? বই পড়া ছাড়াই মানুষ কি ভালো জ্ঞান অর্জন করতে পারে? যে কেউ কি যেকোনো কিছু সম্পর্কে সহজে জেনেই কি এখন কথাবার্তা বলতে পারবে?
না। মানুষ ইউটিউব, ফেসবুক থেকে অনেক তথ্য জানে। কিন্তু সে তথ্য কোন স্ট্রাকচারে সে ফেলবে, কীভাবে রিড করবে এটা সে জানে না। আবার তথ্যের অপর সাইডেও কিছু আছে কিনা, তথ্যকে যাচাই করার যে মিডিয়া লিটারেসি- এগুলো সে জানে না। যে বই পড়বে, পেপার পড়বে, স্কলারলি অপিনিয়ন জানবে, কোর্স করবে- সে এগুলো বুঝবে।
উদাহরণ দিই।
ধরুন, ইসরায়েলের পক্ষের এক ভিডিও। সে ভিডিওতে দেখানো হলো, অক্টোবর ৭-এ হামাস কীভাবে ইসরায়েলে ঢুকে হাজারের মত মানুষ হত্যা করেছে। কীভাবে মানুষ পুড়িয়ে দিয়েছে। কীভাবে নাচগান করা ছেলেমেয়েদেরকে মেরে ফেলছে। এ ভিডিও যে দেখবে সে অনেক তথ্য জানবে। ঠিক কতজন মারা গেছে, কয় তারিখ, কয়টায় এমন তথ্য জানবে।
কিন্তু সে জানে না এ তথ্যকে কীভাবে দেখা উচিত। যেকোনো রেজিস্টেন্স বা আত্মরক্ষামুলক যুদ্ধ, হোক তা মুসলিম বা অমুসলিমদের, সেটা এমন ভয়াবহই হবে। সেটা খুব ভদ্র, সুশীল, আইন মেনে হবে না। আত্মরক্ষা ও অধিকারের জন্য যে লড়াই করে, তাঁর জন্য এটা জীবন-মরণ বিষয়। সে তাঁর হাতে যাই আছে, তা নিয়েই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এটা আপনি কীভাবে জানবেন? যদি আপনি প্রতিরোধের ইতিহাস পড়েন।
তাই কোনোকিছু গভীরে গিয়ে পড়ার কোনো বিকল্প নেই। ফেসবুক-ইউটিউবের ছোট ছোট আলাপ আপনাকে জ্ঞানের অনুভূতি দেবে। সত্যিকার অর্থে কোনো জ্ঞান দেবে না। ভাসা ভাসা তথ্য দেবে, তথ্যকে চিন্তার কোথায় বসাতে হবে তা দেবে না। ইতিহাসের দৃষ্টিভঙ্গি দেবে না। আপনার মূল্যবোধ, ওয়ার্ল্ডভিউ, বয়ানকে শক্তিশালী করবে না। তাই পড়তে হবে।

