আত্মমর্যাদা
আত্মমর্যাদা ইতিহাসজুড়েই বেশ সমাদৃত একটা বৈশিষ্ট্য।
সম্মানের জন্য মানুষ লড়াই করতো। যুদ্ধ করতো।
সাম্রাজ্যের পতন ঘটানো হতো অনারের (honor) জন্য।
ট্রয়ের যুদ্ধ হয়েছিলো অনারের জন্য।
সালাহ আদ-দীন মাঝপথ থেকে ফিরে এসেছিলেন বল্ডউইনের আত্মমর্যাদার উপরে আস্থা রেখে।
মুসলিম বা অমুসলিম- আত্মমর্যাদা ছিলো গোল্ডেন কোয়ালিটি।
আজকাল সবার মধ্যে আত্মমর্যাদার খুব অভাব। হোক সে মুসলিম বা অমুসলিম, হোক সে ফাসিক বা দ্বীনদার।
শেষ নবী ﷺ বলে গেছেন, যার চোখের লজ্জা নেই সে সব করতে পারে।
বর্তমানে মানুষ সবই করে।
নিজের অসম্মান ডেকে আনে, এমন সবই।
অথচ...
আত্মমর্যাদা একজন মানুষকে মিথ্যা বলতে দেয় না।
সে কারো কথা কারো পেছনে লাগায় না।
আত্মমর্যাদা মানুষকে অন্যের স্ত্রী, অন্যের মেয়ের দিকে নজর দিতে বাধা দেয়। তাদেরকে লুকিয়ে ভোগ করতে লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে যায়।
নিজের বোন-স্ত্রীর দিকে নজর দিলে চোখ তুলে ফেলে।
কারো কাছে কিছু চাইতে তার বুক ফেটে যায়।
মানুষকে ঠকালে তার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করে।
সম্পদ, স্ট্যাটাসকে সে পদদলিত করে।
জীবনের চেয়ে আদর্শ, মিশন তার বেশি প্রিয়।
অপমান তার খুব বেশি গায়ে লাগে।
নির্জলা মিথ্যা, হোক তা ছোট, তার মাথায় রক্ত তুলে দেয়।
চেহারা লাল হয়, নিঃশ্বাস ভারি হয়, কান গরম হয়ে যায়।
আত্মমর্যাদা তাকে অভ্যস্ত হতে দেয় না। হাল ছাড়তে দেয় না। ঘুমোতে দেয় না।
নিজ উম্মাহর অসম্মান দেখার চেয়ে আত্মমর্যাদাবান মানুষ মৃত্যুকে বেছে নেয়।
তাগুতের সামনে হাসতে গেলে তার দাঁত দেখা যায় না। জালিমের সাথে বুক মেলায় না।
আত্মমর্যাদা উচ্ছনে যাওয়া বালককে পুরুষ বানায়। উদাস বালিকাকে নারী বানায়।
আত্মমর্যাদাসম্পন্ন লোকের ব্যক্তিত্বের প্রভাব পরে তার আশেপাশের সবার উপরে।
তার পাশে মানুষ নিজেকে নিরাপদ ভাবে।
তার সামনে মানুষ মেপে কথা বলে।
ছোট অন্যায় করতেও অস্বস্তিবোধ করে।
জালিমের দম্ভ চূর্ন হয় তার দৃঢ়তার সামনে।
তার ব্যক্তিত্বে প্রভাবে নত হয়ে যায় তাগুতের শির।
বুক পেঁতে দেওয়া মানুষটাকে ভয় পেয়ে থমকে দাঁড়িয়ে যায় মিলিয়ন ডলারের ট্যাংক।
বিশাল সাম্রাজ্যের ব্যাপক ক্ষমতাধর রাজা মিইয়ে যায় মরুভূমি থেকে আসা উষ্কখুষ্ক চুলের সাহাবার সামনে।
অনার আরবের যুবরাজকে তোরাবোরার গুহায় আনে।
আত্মমর্যাদা আমেরিকার বিখ্যাত বক্তাকে ইয়েমেনের রাস্তায় ছিন্নভিন্ন করে দেয়।
ক্ষমতাসীনের হুমকিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ফাঁসির মঞ্চ বেছে নেওয়ার নাম হলো আত্মমর্যাদা।
আত্মমর্যাদাবান হোন। সম্মান বেড়ে যাবে।
আত্মমর্যাদাবান হোন। জীবনে অর্থ আসবে।
আত্মমর্যাদাবান হোন। আল্লাহ দুনিয়া পায়ের কাছে এনে দেবেন।

